islam/
জুম-আর ‍দিনের আমল

জুম-আর ‍দিনের আমল

 

জুম-আর ‍দিনের আমল 

জুমআ মুসলমানের সাপ্তাহিক বিশেষ ইবাদতের দিন। এ দিনের ইবাদতের ফজিলত অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি। এ দিনের ইবাদতের নির্দেশ ও গুরুত্ব তুলে ধরে আল্লাহ তা-আলা আয়াত নাজিল করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-'মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।' (সুরা জুমআ : আয়াত ৯-১০)




জুমআর দিনের বিশেষ তিনটি আমল রয়েছে। একটি হলো কুরআনুল কারিমের ১৮নং 

১,সুরা 'সুরা কাহাফ' তেলাওয়াত করা।

২,দ্বিতীয়টি হলো আসর থেকে মাগরিবের মধ্যে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছোট্ট একটি দরূদ পড়া। 

৩,আর শেষটি হলো আসর-মাগরিবের মধ্যবর্তী সময়ে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকা।

সুরা কাহফ তেলাওয়াতের আমল 

 হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমআ থেকে অপর (পরবর্তী) জুমআ পর্যন্ত নূর হবে।

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকেও মুক্ত থাকবে।

 অন্য রেওয়ায়েতে আছে এক জুমআ থেকে অপর জুমআ পর্যন্ত তার সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে উল্লিখিত গোনাহ মাফ হওয়ার দ্বারা সগিরা গুনাহ উদ্দেশ্য। কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য হচ্ছে যে, কবিরা গোনাহ তাওবা করা ছাড়া ক্ষমা হয় না।

তবে যদি কেউ পুরো সুরা তেলাওয়াত করতে না পারে তবে ন্যূনতম সুরাটির প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত তেলাওয়াত করায়ও রয়েছে এ সব বিশেষ ফজিলত।

- দরূদ পড়ার আমল

হজরত আওস ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের সব দিন অপেক্ষা জুমআর দিনটিই হলো শ্রেষ্ঠ। এতে হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এবং এতেই বিশ্ব ধ্বংসের জন্য শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে এবং এ দিনের পুনর্জীবিত করার জন্য দ্বিতীয়বার ফুঁক দেয়া হবে। এ দিন তোমরা আমার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ কর।

তোমাদের দরূদ নিশ্চয় আমার কাছে উপস্থিত করা হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দরূদ আপনার কাছে কেমন করে উপস্থিত করা হবে অথচ আপনি তখন মাটি হয়ে যাবেন?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন, ‌আল্লাহ তাআলা নবিদের শরীর জমিনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, বাইহাকি)

যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর ৮০ বার এ দরুদ পড়বে-

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِهِ وَسَلِّم تَسْلِيْمَا

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলিমা।’ তার ৮০ বছরের গোনাহ্ মাফ হবে এবং ৮০ বছর ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে। সুবহানাল্লাহ!

- জুমআর দিনের তৃতীয় বিশেষ আমল
যাদুল মাআ`দ গ্রন্থে এসেছে, ‘এ মর্যাদাবান মুহূর্তটি হলো- জুমআ`র দিন আছরের নামাজ আদায়ের পর (থেকে মাগরিব পর্যন্ত)।’ এ মতে পক্ষে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদিস রয়েছে আর তা হলো-

জুমআর দিন সূর্য উদয় হওয়ার পর (দুনিয়ায়) মানুষ এবং জিন ব্যতিত প্রত্যেক প্রাণীই কেয়ামতের ভয়ে আতংকিত থাকে। জুমআর দিনে এমন একটি বরকতময় সময় আছে, যাতে মুসলিম বান্দা নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করবে, আল্লাহ্ তাকে তা দান করবেন।

কা’ব বিন মালিক এ হাদিসের বর্ণনাকারী হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞেস করলেন, এটি কি প্রত্যেক বছরে হয়ে থাকে?

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, বরং তা (এ সময়টি) প্রত্যেক জুমআতেই রয়েছে। অতঃপর কা’ব বিন মালিক তাওরাত (কিতাব) খুলে পাঠ করলেন এবং বললেন, আল্লাহর রাসুল সত্য বলেছেন।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, অতঃপর আমি (তাওরাত কিতাবের পারদর্শী) হজরত আব্দুল্লাহ বিন সালামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। এবং তাঁকে কা’ব বিন মালিকের সঙ্গে আমার বৈঠকের কথা জানাই। তখন তিনি (হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম) বললেন, আমি সেই সময়টি সম্পর্কেও অবগত আছি।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু তার কাছ থেকে সেই সময়টি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বলেন-
‘এটি (দোয়া কবুলের সেই সময়টি) হচ্ছে জুমআর দিনের শেষ মুহূর্ত।’

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এটি কি করে সম্ভব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো বলেছেন, ‘মুসলিম বান্দা তখন নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ্ তাকে তা দান করবেন।’

আর (জুমআর) দিনের শেষ মুহূর্তের সময়টিতে নামাজ পড়া বৈধ নয় (আসর নামাযের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নামায পড়া নিষিদ্ধ)। সুতরাং উহা তো নামাজের সময় নয়।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম তখন বললেন-
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি বলেন নি যে ব্যক্তি কোনো মজলিসে বসে নামাজের অপেক্ষায় থাকে সে ব্যক্তি নামাজ পড়া (নামাজের ওয়াক্ত হওয়া) পর্যন্ত নামাজেই মশগুল থাকে?

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করার, প্রিয় নবির ছোট্ট দরূদ এবং আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে ইবাদত-বন্দেগি করে অতিবাহিতি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


আল্লাহকে অধিক সেজদা করার ফজিলত

আল্লাহকে অধিক সেজদা করার ফজিলত

আল্লাহকে অধিক সেজদা করার ফজিলত

  • আল্লাহকে অধিক সেজদা করার ফজিলত আল্লাহ তাআলার আনুগত্যে লুটিয়ে পড়ার সর্বোত্তম মাধ্যম হলো ‘সেজদা’। আর এ সেজদা আদায়ের মাধ্যমেই মানুষ দ্রুত আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের সৌভাগ্য অর্জন করে। বান্দা যখন আল্লাহ তাআলার জন্য সেজদা আদায় করে তখন তার মাঝে থাকে না কোনো আমিত্ব ও আহংকার। হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদা আদায়ের ফজিলত বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলার অধিক সেজদা আদায়ের মাধ্যমেই মানুষ চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ করবে। হজরত মা’দান বিন আবি তালহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘(আমি) আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আজাদকৃত দাস সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললাম, ‘আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলে দিন যা করলে আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। (অথবা বললাম, ‘আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমলের কথা বলে দিন) কিন্তু তিনি উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইলেন। পুনরায় আমি একই আবেদন করলাম। তবুও তিনি নিরব রইলেন। আমি তৃতীয়বার আমার আবেদনের পুনরাবৃত্তি করলাম। উত্তরে তিনি (হজরত সাওবান) বললেন- এ ব্যাপারে আমি আল্লাহর রাসুলকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি আল্লাহর জন্য অধিক সেজদা করাকে অভ্যাসে পরিণত করে নাও। কারণ যখনই তুমি আল্লাহর জন্য একটি সেজদা করবে; তখনই আল্লাহ তার (ওই সিজদার) বিনিময় তোমাকে একটি মর্যাদায় উন্নীত করবেন এবং একটি গোনাহ মোচন করবেন।’ (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ) অন্য হাদিসে এসেছে- হজরত উবাদা বিন সামেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে শুনেছেন, প্রিয়নবি বলেছেন, ‘প্রত্যেক বান্দাই; যখন সে আল্লাহ জন্য একটি সেজদা করে তখনই তার বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য একটি সাওয়াব লেখেন; তার একটি গোনাহ ক্ষমা করে দেন এবং তাকে একটি মর্যাদা উন্নীত করে দেন। অতএব তোমরা বেশি বেশি করে (আল্লাহর জন্য) সেজদা কর।’ (ইবনে মাজাহ, সহিহ তারগিব) পরিশেষে... আল্লাহ তাআলার সেজদা আদায়ের মাধ্যমেই মানুষ জান্নাতের নেয়ামত লাভ করবে। যা হজরত রাবিয়াহ বিন কাব বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুলেরে (খেদমতে তার) সঙ্গে রাত যাপন করতাম; তার অজুর পানি এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস হাজির করে দিতাম। একদিন তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি আমার কাছে কিছু চাও।’ আমি বললাম, ‘আমি জান্নাতে আপনার সংস্পর্শে থাকতে চাই।’ তিনি বললেন, ‘এ ছাড়া আর কিছু?’ আমি বললাম- ‘ওটাই (আমার বাসনা)।’ প্রিয়নবি বললেন, ‘তাহলে অধিক অধিক (আল্লাহর) সেজদা করে (নফল নামাজ আদায়ে) এ ব্যাপারে আমার সহায়তা করা।’ (মুসলিম, আবু দাউদ) মুসলিম উম্মাহর উচিত বান্দার প্রতি বিধানকৃত ফরজ নামাজ যথাযথ আদায়ের পাশাপাশি অধিক হারে সুন্নাত ও নফল নামাজ আদায় এবং অধিকহারে আল্লাহ তাআলাকে সেজদা করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বেশি বেশি সেজদা আদায় করার তাওফিক দান করুন। সেজদা আদায়ের মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের মর্যাদা লাভ করার তাওফিক দান করুন এবং চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সংস্পর্শ লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
                                                                  About

About

shottoprokash is tha most populer technclogy website in bangladesh,you can get useful tips & triks on this websate,this websate helps you to grow your business


phone;01752790631 

Email;liakothusain123@gmail.com

name; liakot husain